২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, শুক্রবার

সিরিজে এগিয়ে গেল পাকিস্তান

- Advertisement -

প্রথম ম্যাচ বৃষ্টিবাধায় পরিত্যক্ত হয়েছিল; দ্বিতীয় ম্যাচেও প্রতিপক্ষ ওই বৃষ্টি। তবুও ম্যাচ মাঠে গড়িয়েছে । যেখানে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজকে সাত রানে হারিয়েছে পাকিস্তান।

স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজকে সাত রানে হারিয়েছে পাকিস্তান

টসে হেরে প্রথমে ব্যাটিংয়ে সফররতরা। দুই উদ্ধোধনী ব্যাটসম্যান শারজিল খান এবং মোহাম্মদ রিজওয়ানের শুরুটা দেখেশুনে হলেও আকিল হোসেনের করা ইনিংসে তৃতীয় ওভারে তিন এবং চার নাম্বার বলে টানা দুটো ছক্কা হাকিয়ে আক্রমণাত্মক ক্রিকেটেরই ইঙ্গিত দিচ্ছিল রিজওয়ান৷

খেলা যখন ক্যারিবিয়ানদের মাঠে, সেখানে একটু আধটু বিনোদন থাকবে না তা কি হয়? পরের ওভারেই বল করতে এলেন ক্রিস গেইল। খুললেন না মাথায় থাকা ক্যাপটা, এমনকি চোখের ঐ সানগ্লাসটাও। টানা দুটো ওয়াইড বল করলে যেখানে বোলারদের চোখমুখ জুড়ে হতাশা দেখা যায়, সেখানে গেইল ৩ নাম্বার বলটা করতে গিয়ে টানা দুটো ওয়াইড করার পরও হেসেছেন, মজা করেছেন ব্যাটিং প্রান্তে থাকা শারজিল খানের সাথে। ৩ নাম্বার বলেই পেয়ে যেতে পারতেন উইকেটও, যদি না শারজিল খানের সজোরে হাঁকানো বলটা পোলার্ডের হাত থেকে ফসকে যেতো। ৫ নাম্বার বলেও এসেছিলো রিজওয়ানকে ফিরাবার সুযোগ, কিন্তু আম্পায়ার এলবিডব্লিউয়ের আবেদন নাকচ করে দেয়ায় পাননি উইকেটের দেখা।

তবে, খুব বেশী সময় ক্রিজে থাকতে পারেননি শারজিল। পরের ওভারেই বল করতে আসা হোল্ডারকে ছক্কা হাঁকিয়েই ক্যাচ তুলে দিয়েছেন মিড অনে দাঁড়ানো আকিল হোসেনের হাতে। প্যাভিলিয়নে ফিরে গিয়েছেন ১৬ বলে ২০ রান করেই।পাওয়ারপ্লের প্রথম ৬ ওভার শেষে পাকিস্তানের দলীয় সংগ্রহ গিয়ে ছিল ১ উইকেটে ৫৫ রান। ১০ ওভার শেষে ৮৫, ১৪ ওভারে ১১২।

চার রানের জন্য অর্ধশতক পাননি মোহাম্মদ রিজওয়ান

১৪.২ ওভারে ব্যক্তিগত ৪৬ রান করে রান আউট হয়ে সাজঘরে ফিরে যান রিজওয়ান। তিনি না পারলেও অর্ধশতক পূরণ করেছেন বাবর আজম। গায়ানার ঘরের ছেলে শেফার্ডকে ছক্কা হাঁকিয়ে ছুঁয়েছেন মাইলফলক। বাবরের অর্ধশতকের পরই বৃষ্টি বাধায় খেলা বন্ধ হয়ে যায়। পাকিস্তানের রান ২ উইকেটে ১৩৪ রান।

বৃষ্টি শেষে মাঠে ফিরতেই প্রথম বলেই অধিনায়ক বাবর আজমের উইকেট হারিয়েছে সফররতরা। হোল্ডারের করা অফ ইয়র্কার বলটি ব্যাটে অল্প একটু ছুঁয়ে কিপারের হাতে পৌছলে হোল্ডার আপিল করে বসে। আম্পায়ার তার আবেদন নাকচ করে দিলেও সে ছিল ভীষণ আত্মবিশ্বাসী। ওয়েস্টইন্ডিজ ডিআরএসের সুবিধা গ্রহণ করে এবং পেয়ে যায় তাদের কাঙ্ক্ষিত উইকেটটি। প্যাভিলিয়নে ফিরবার পূর্বে ৪০ বল খেলে বাবরের সংগ্রহ ৪ বাউন্ডারি ও ২ ছক্কায় ৫১ রান।

এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়েছে পাকিস্তান। ইনিংসে থিতু হতে পারেনি একজনও। শেষ ৩ ওভারে ১৭ রান তুলতেই হারিয়েছে ৫ উইকেট। ইনিংস থেমেছে ১৫৭ রানে। ওয়েস্টইন্ডিজের হয়ে জেসন হোল্ডার ৪ ওভারে ২৬ রান খরচ করে নিয়েছেন ৪ উইকেট।

১৫৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় স্বাগতিকরা। ম্যাচের দ্বিতীয় বলেই ফ্লেচারকে বোল্ড করে দিয়ে প্যাভিলিয়নে পাঠান মোহাম্মদ হাফিজ। পরের ওভারেই শাহিন আফ্রিদি পেয়ে যেতে পারতেন গেইলের উইকেটটিও। শাহিনের দারুণ বলে পরাস্ত হোন গেইল, বল গিয়ে লাগে প্যাডে। এলবিডব্লিউয়ের জোড়ালো আবেদন হলেও হাত তুলেননি আম্পায়ার।প্রথম ওভারে মাত্র ৩ রান দিয়ে ১ উইকেট লাভ করা হাফিজ পরের ওভারে এসে দিয়েছেন মাত্র ২ রান, পঞ্চম ওভারে দুর্দান্ত ছন্দে থাকা লুইসকে করেছেন মেইডেন ওভার।

পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে বল করতে এসে নিজের প্রথম ওভারেই ক্রিস গেইলকে প্যাভিয়িনে ফিরিয়েছেন হাসান আলী। ২০ বল খেলে মাত্র ১৬ রান করেই ফিরতে হয়েছে তাকে। পাওয়ার প্লের নির্দিষ্ট ৬ ওভার শেষে স্বাগতিকরা তুলেছে ২ উইকেটে ৩১।

১০ ওভার শেষে পাকিস্তান দলের সংগ্রহ ছিল ১ উইকেট হারিয়ে ৮৫। ৫৯ রানে ২ উইকেট হারিয়ে খুব যে পিছিয়ে ছিল স্বাগতিকরা, তাও বলা যাবে না। শুরুর ধাক্কাও কাঁটিয়ে উঠতে শুরু করেছে ততোক্ষণে, লুইস-হেইটমায়ারের ২৮ রানের জুটিতে। কিন্তু, ব্যক্তিগত ১৭ রানেই হেইটমায়ারের বিদায়ের মধ্য দিয়ে শেষ হয় তাদের জুটি।

জয়ের জন্য প্রয়োজন ৪৯ বলে ৮৮ রান, হাতে ৭ উইকেট। নতুন ব্যাটার নিকোলাস পুরান। বোলিংয়ে আগের ৩ ওভারে মাত্র ৫ রান দিয়ে ১ উইকেট পাওয়া মোহাম্মদ হাফিজ। টানা পাঁচটি বল ডট করার পর শেষ বলে দিলেন ১ রান। সেইসাথে নিজের ৪ ওভারের বোলিংয়ের কোটা শেষ করলেন আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে নিজের সবচেয়ে মিতব্যয়ী বোলিং ফিগারের মধ্য দিয়ে।

৩৫ রানে অপরাজিত ছিলেন লুইস, মাংসপেশির চোটে ছাড়তে হয়েছে মাঠ। শেষ ৩০ বলে যখন প্রয়োজন ৭৪ রান, তখন ওয়াসিম জুনিয়রকে টানা তিন বলে দুই ছক্কা এবং এক বাউন্ডারি হাঁকিয়ে দলকে লড়াইয়ে এগিয়ে নিলেন নিকোলাশ পুরাণ। ওয়াসিমের করা ঐ ওভার থেকে এলো গুরুত্বপূর্ণ ১৮ টি রান। এরপর, হাসান আলীর ওভার থেকেও এলো একটি ছক্কা, সর্বমোট ১০ রান। জয়ের জন্য শেষ ১৮ বলে স্বাগতিকদের প্রয়োজন ৪৬ রান।

৯ বলে ৯ রান করা পোলার্ড ওভারের মাঝপথে ব্যাট পরিবর্তন করলেও হাঁকাতে পারেনি কোনো বাউন্ডারিই। নিকোলাশ পুরাণ টানা দু বলে দুটো বাউন্ডারি হাঁকানোর পরেও তাই শেষ ১২ বলে জয়ের জন্য স্বাগতিকদের প্রয়োজন ৩৫ রান।

হাসান আলীর করা ১৯তম ওভারে প্রথম বলেই সিঙ্গেল নিয়ে দেন পোলার্ড। দ্বিতীয় এবং তৃতীয় বলে টানা দুটো ছক্কা হাঁকিয়ে নিজের অর্ধশতক পূরণ করেন পুরাণ। এরপরের ৩ বলে এসেছে মাত্র ২ রান। জয়ের জন্য শেষ ওভারে প্রয়োজন ২০।

প্রথম বলে ২ রান নিয়ে দ্বিতীয় বলেই আউট হয়ে প্যাভিলিয়নের মুখে ১৪ বলে ১৩ রান করা পোলার্ড। ৪ বলে প্রয়োজন ১৮ রান। এরপরের দুই বলই ডট। শেষ ২ বলে ১০ রান এলেও জয় হাতছাড়া হয়ে ওয়েস্টইন্ডিজের। ৬২ রানে অপরাজিত ছিলেন পুরান। রোববার সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে মাঠে নামবে দুই দল।

- Advertisement -spot_img
- Advertisement -

সর্বশেষ

- Advertisement -
- Advertisement -spot_img