২০০৭ সালে প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তিনি ছিলেন বাংলাদেশের ক্যাপ্টেন। তাঁর ব্যাটে ভর করেই ওই বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে জয় পাওয়ার পর সুপার এইটে খেলে বাংলাদেশ; এরপর পাঁচটি বিশ্বকাপ খেলেও মূল পর্বে আর একটি ম্যাচও জিততে পারেনি বাংলাদেশ। মেরেকেটে বললে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ইতিহাসে বাংলাদেশের ওটাই ‘সেরা’ সাফল্য; যা এসেছিল মোহাম্মদ আশরাফুলের হাত ধরে।
দুয়ারে আরেকটি বিশ্বকাপ, দলের অধিনায়ক, সদস্য ও দলের বাইরের অনেক ক্রিকেট সংশ্লিষ্ট মানুষের মুখে এবারের বিশ্বকাপ নিয়ে শোনা যাচ্ছে বড় আশার বাণী। সেমিফাইনাল-ফাইনাল খেলে ফেলার আশাবাদও ব্যক্ত করছেন অনেকে। কিন্তু মোহাম্মদ আশরাফুল অত বড় আশার পথে এখনই হাঁটতে রাজি নন, তিনি থাকতে চান বাস্তব প্রেক্ষাপটে। আশরাফুলের আশা সাধারণ, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মূল পর্বে ‘দ্বিতীয়’ জয়টি আগে পাক বাংলাদেশ।
সোমবার গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেছেন মোহাম্মদ আশরাফুল।
“বিশ্বকাপের মূল পর্বে একটিই জয় আমাদের। শেষ তিনটি সিরিজ দারুণভাবে জেতার ফলে এবার আমাদের আশা অনেক বড়। তবে আমি চাচ্ছি অন্তত দ্বিতীয়, বা তৃতীয় জয়টি আমরা যাতে এবার তুলে নিতে পারি। সেমিফাইনাল-ফাইনাল খেলার ইচ্ছা তো সবার মতো আমারও আছে। কিন্তু দুটি ম্যাচ জিতলে আমি খুশি থাকবো”- বলেছেন আশরাফুল
সাক্ষাৎকারে নিজের খেলা প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, বিশেষতঃ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওই ম্যাচটি নিয়ে স্মৃতিচারণে মুখর হন বাংলাদেশের একসময়কার প্রধান ভরসা। সে ম্যাচে বাকিরা কিপটে বোলিং করলেও আশরাফুল বল হাতে দিয়েছিলেন ৪ ওভারে ৫৫ রান। উইন্ডিজ দাঁড়া করিয়েছিল ১৬৪ রানের বড় লক্ষ্য। কিন্তু পরবর্তীতে আশরাফুলের ২৭ বলে ৬১ ও আফতাব আহমেদের ৪৯ বলে ৬২ রানের ইনিংসে ভর করে ৬ উইকেটের জয় পায় বাংলাদেশ।
“বল হাতে প্রথম দুই ওভারে আমি মাত্র ১১ রান দিয়েছিলাম এজন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে আমি কোটা পূরণ করব। কিন্তু পরের দুই ওভারেই আমি বিশের বেশি রান করে দিয়ে ফেলি। ড্রেসিংরুমে ঢোকার পথে আমি দেখি জুনিয়ররা, বিশেষ করে সাকিব তামিমরা মুখ কালো করে দাঁড়িয়ে আছে। তখন আমি তাদের বলি “চিন্তা করিস না, আমি যে রান দিয়েছি সেটা আমিই করে দিয়ে আসব”। এবং এরপর আমি ব্যাট হাতে তখনকার দ্রুততম ফিফটিটি করি (২০ বলে), কিছুদিন পর অবশ্য ১৩ বলে ফিফটি করে যুবরাজ সিং তা ভেঙ্গে দিয়েছিলেন।”- বলেছেন আশরাফুল
২০০৭ ও ২০০৯ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন আশরাফুল। নেতৃত্বভার তখন উপভোগ করলেও তিনি এখন মনে করেন, হয়তো আরেকটি দেরি করে নেতৃত্ব পেলেই ভালো হত।
“দুটি বিশ্বকাপে নেতৃত্ব দিয়েছি। খুবই ভালো অনূভূতি ছিল। তখন আমাদের সবাই পাওয়ার হিটিং করতে চাইতো ফলে আমরা ভেবেছিলাম এই ফরম্যাটে হয়তো দলকে আমরা কিছু দিতে পারব। নেতৃত্ব উপভোগ করেছি তবে এখন মনে হয়, আরেকটি দেরি করে, ৩০ বছরের কাছাকাছি এসে নেতৃত্ব পেলে বোধহয় আমার জন্য বেশি ভালো হত।”