আহমেদাবাদের নীল সমুদ্রের মাঝে অস্ট্রেলিয়ার সমর্থক হাতেগোনা কয়েকজন। সংখ্যাটা একশো হবে কিনা সন্দেহ। ক্যামেরা তাই অস্ট্রেলিয়ার সাফল্যে গ্যালারির চাইতে ডাগ-আউটেই ফোকাস করছিল বেশি। অজিদের পক্ষে প্রতিটা উইকেট, প্রতিটা বাউন্ডারি যেন আহমেদাবাদকে পরিণত করছিল ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া স্তব্ধ কোনো উপত্যকায়। অস্ট্রেলিয়া জিততেই পারে, তাই বলে এভাবে? পুরো টুর্নামেন্টে দাপট দেখানো, ফাইনালের আগ পর্যন্ত দশ ম্যাচে দশ জয় পাওয়া ভারতকে, এক লাখ বত্রিশ হাজার দর্শকের চিৎকারকে পাত্তা না দিয়ে?
ভারতের দেওয়া ২২৬ রানের টার্গেটে টপকে গেলো ৬ উইকেট আর ৭ ওভার হাতে রেখে।
টস জিতে অস্ট্রেলিয়ান ক্যাপ্টেন প্যাট কামিন্স যখন বোলিং নিলেন অনেকেই বিস্মিত হয়েছিলেন। ডিউ ফ্যাক্টর ছিল তবে টসে জিতে ভারতকে ব্যাটিংয়ে পাঠানো অনেকটা খাল কেটে কুমির আনার মতোই। কথায় আছে, ভাগ্য থাকে সাহসীদের পক্ষে। কামিন্স ছিলেন সাহসীদের দলেই। সেকারণেই হয়তো ভারতের মতো দলকে আড়াইশর কমে থামিয়ে দিতে পেরেছে কামিন্স অ্যান্ড কো.।
অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং ইনিংসের শুরুটা নড়বড়ে। পঞ্চাশের আগের ৩ উইকেট নেই। স্টিভেন স্মিথ রিভিউ নিলে বাঁচতে পারতেন তবে সুযোগ কাজে না লাগিয়ে কেনো তিনি প্যাভিলিয়নের পথ ধরলেন তা নিয়েই প্রশ্ন থেকেই যায়। তবে ম্যাচের পরের অংশটুকু শুধুই ট্রাভিস হেডময়। সেঞ্চুরি তো বটেই সহজ করে ফেললেন। অস্ট্রেলিয়া জিতল চ্যাম্পিয়নের মতো করেই।
১২০ বলে ১৩৭ রানের ইনিংস খেলে হেড যতক্ষণে আউট হলেন ততক্ষণে ম্যাচের ফল নির্ধারণ হয়ে গেছে। উইনিং শট খেললেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। তাতেই অস্ট্রেলিয়ার ষষ্ঠ শিরোপা নিশ্চিত।
১৯৮৭,১৯৯৯ ,২০০৩, ২০০৭, ২০১৫ সালের পর ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপ জিতল অস্ট্রেলিয়া। অর্থাৎ হেক্সা কমপ্লিট। শিরোপার হিসেবে অজিদের ধারেকাছে আগেও কেউ ছিল না এখনো নেই। তাসমান পাড়ের দেশটা যেখানে জিতেছে ৬ বিশ্বকাপ সেখানে যৌথভাবে সর্বোচ্চ ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং ভারতের বিশ্বকাপ সংখ্যা দুটি করে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ভারত: ২৪০ (৫০ ওভার) (কোহলি ৫৪, রোহিত ৪৭, রাহুল ৬৬; স্টার্ক ১০-০-৫৫-৩, কামিন্স ১০-০-৩৪-২ , হেইজেলউড ১০-০-৬০-২)
অস্ট্রেলিয়া: ২৪১/৪ (৪৩ ওভার) (হেড ১৩৭, লাবুশেন ৫৮*, মার্শ ১৫; বুমরাহ ৯-২-৪৩-২, সিরাজ ৭-০-৪৫-১ , শামি ৭-১-৪৭-১)
ফলাফল: অস্ট্রেলিয়া ৬ উইকেটে জয়ী
ম্যাচসেরা: ট্রাভিস হেড
টুর্নামেন্টসেরা: বিরাট কোহলি